...আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম___ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ...

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন,
কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন।
ভাব-সম্প্রসারণ: স্বদেশের প্রিয় মানচিত্র, দেশের গান, জাতীয় সংগীত আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ঠিকানা এবং সঞ্জীবনী সুধা। মানুষ মায়ের মতোই জন্মভূমিকে ভালবাসে। প্রতিটি সুনাগরিকের কাছে মাতৃভূমি শান্তি ও সুখের নীড়। মানুষের হাসি, কান্না, প্রেম, আনন্দ, খ্যাতি ও গৌরব সব কিছুই তার জন্মভূমিকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। স্বদেশ ও স্বজাতির হিত সাধনের বাসনা যার নেই সে পশুর সমতুল্য। দেশপ্রেম মানব জীবনের একটি মহৎ গুণ। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার মধ্যেই নাগরিক জীবনের সার্থকতা নিহিত। একজন লোকের অর্থ-সম্পদ, লোকবল প্রচুর থাকতে পারে কিন্তু এগুলো দিয়ে তার মহত্ত্বের পরিচয় মেলে না। মহত্ত্বের পরিচয় পেতে হলে দেখা দরকার তার স্বদেশের উপকার করার ইচ্ছা আছে কতটুকু। ব্যক্তির মধ্যে স্বদেশপ্রেম বা স্বদেশের উপকার করার ইচ্ছা থাকলেই সে প্রকৃত মানুষরূপে পরিগণিত হয়। মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণই করলেই একজন মানুষ প্রকৃত মানুষ হয় না। তার ভিতরে যদি মহত্ত্বের গুণাবলি না থাকে তবে সে নামেই মানুষ, প্রকৃত মানুষ নয়। তখন তাকে একটি পশুর সাথে তুলনা করা যায়। কেননা, পশুও জন্মগ্রহণ করে, খাদ্য খায়, জন্ম দেয় এবং পরিশেষে মারা যায়। পশু ও মানুষের মধ্যে পার্থক্য এই যে, পশুর মধ্যে কোনো মহৎ গুণাবলি নেই যা মানুষের মধ্যে আছে। আর এ মহৎ গুণের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্বদেশপ্রেম। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, "দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।" অর্থাৎ স্বদেশের উপকারে যার মন নেই তার ঈমানই নেই। মহৎ গুণ হচ্ছে দেশপ্রেম বা স্বদেশের উপকার করার ইচ্ছা। কিছু মানুষের মধ্যে যেমন এ ইচ্ছা প্রবল তেমনি কিছু মানুষ আছে স্বদেশবিমুখ, কৃতঘ্ন। যারা নিবেদিতচিত্তে দেশকে ভালোবাসে এবং দেশ ও জাতির উপকারে নিজেকে উৎসর্গ করে, প্রকৃতপক্ষে তারাই মানুষ, দেশপ্রেমিক তারাই। তারা যুগে যুগে, চিরকালের জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন। পক্ষান্তরে, মাতৃভূমিকে যে ভালোবাসে না, স্বদেশের উপকার ও কল্যাণের প্রতি যে ব্যক্তির কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই, এমনকি দেশের আসন্ন বিপদ উপলব্ধি করেও যে দেশের কল্যাণে এগিয়ে আসে না, সেই দেশপ্রেমহীন মানুষ, মানুষ নামের অযোগ্য এবং পশুর সমতুল্য। তাই প্রতিটি মানুষকে স্বদেশের ভালো-মন্দ চিন্তা করতে হয়। দেশের সংস্কৃতি ও তার ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা প্রত্যেক নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই আমাদের সকলেরই উচিত স্বদেশের মান রক্ষা করা, এর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করা ও লালন করা এবং বিশ্বের বুকে তাকে তুলে ধরা। এর জন্য আমাদের প্রয়োজন দেশের উন্নয়ন কর্মে আত্মনিয়োগ করা। শিক্ষা, দীক্ষা, সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অবদান রাখা। আর যারা এসব করতে ব্যর্থ তারা মানুষরূপী পশু।
মূলত, স্বদেশ ও স্বজাতির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার মধ্যেই জীবনের সার্থকতা নিহিত। যিনি দেশের কল্যাণে আত্মোৎসর্গ করেন তিনিই প্রকৃত মানুষ। দেশপ্রেমহীন মানুষ নিঃসন্দেহে পশুর সমান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url