মাৎস্যন্যায় সম্পর্কে কী জান?
উত্তর: স্বাধীন গৌড় রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা শশাঙ্ক প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও বিখ্যাত নরপতি। তাঁর মৃত্যুর পর দীর্ঘসময় বাংলায় কোন সুযোগ্য শাসনকর্তা ছিলেন না। ফলে বাংলায় বিপর্যয় নেমে আসে। সমগ্র দেশে ব্যাপক অরাজকতা এবং বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ বিশৃঙ্খলার সুযোগে একদিকে, হর্ষবর্ধন ও ভাস্কর বর্মণের হাতে গৌড় রাজ্য লন্ডভন্ড হয় এবং অপরদিকে, শক্তিশালী ভূস্বামীরা দ্বন্দ্ব, কলহে জড়িয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় শাসক না থাকায়, সামন্তরাজারা বাংলার মসনদে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করে। সুতরাং বাংলার সিংহাসনে আরোহণের প্রচেষ্টায় প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। এ সময় বাংলা জুড়ে মাৎস্যন্যায় দেখা দেয়। উল্লেখ্য যে, মাৎস্যন্যায় বলতে অরাজকতাপূর্ণ অবস্থাকে বুঝায়।
সমাজপতিদের এ অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকে মাৎস্যন্যায় নামে অভিহিত করা হয়। বাংলায় এ অরাজকতা চলে প্রায় এক শতাব্দী। পাল রাজাদের সিংহাসনে আরোহণের ফলে অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এ অরাজকতার অবসান ঘটে। ফলে বঙ্গদেশে শাস্তি ফিরে আসে। উল্লেখ থাকে যে, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে, লামা তারানাথের বর্ণনায় এবং বৌদ্ধগ্রন্থ থেকে বাংলায় মাৎস্যন্যায় সৃষ্টির বর্ণনা পাওয়া যায়।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url